Dalanbari O Nirhara | দালানবাড়ি ও নীড়হারা
₹170Asim Kundu | অসীম কুন্ডু
Showing all 30 results
Asim Kundu | অসীম কুন্ডু
Kajal Sen | কাজল সেন
‘শিরোনামে চাঁদ’ এবং ‘গাঙ্গুলি ম্যাম’ এই দুটি ছোট উপন্যাসকে দুই মলাটে সংকলিত করে প্রকাশ করা হল ‘শিরোনামে চাঁদ ও গাঙ্গুলি ম্যাম’ বইটি। বিগত শতাব্দীর সত্তর দশকের কবি, গল্পকার ও লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদক কাজল সেনের এটাই প্রথম উপন্যাসের বই। দুটি উপন্যাসের কুশী লবের শ্রেণি অবস্থান মধ্যবিত্ত স্তরে। তাদের ব্যক্তিগত জীবন ও যাপনের বিভিন্ন আশা-আকাঙ্ক্ষা, মুগ্ধতা-হতাশা, স্বপ্ন-ফ্যান্টাসি চিত্রিত হয়েছে দুটি ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। সমষ্টিগত জীবনের অংশীদার হয়েও প্রতিটি মানুষের জীবন যে স্বতন্ত্র এবং বিচিত্র, তারই বহু বর্ণময় আলেখ্য ‘শিরোনামে চাঁদ ও গাঙ্গুলি ম্যাম’।
Samawita Chakraborty | শময়িতা চক্রবর্তী
হোনিয়া নদীর দু ধারে সিংহের মতো ঘুমিয়ে থাকা কেনিয়ার দুই প্রত্যন্ত গ্রাম কামেনো আর মাকুয়ু। সবে শ্বেতাঙ্গ বসতকাররা মিশনারীর ছদ্মবেশে সেখানে পা রাখতে চলেছে, ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে এখানকার উপজাতিদের জীবন। মহান স্রষ্টা মুগো ও চেগে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন প্রজাপতির মতো রঙিন পোশাক পরা মানুষগুলো থেকে সাবধান। ওদের শিক্ষা লাভ করেই ওদের জব্দ করতে হবে। পাহাড় থেকে উদয় হবে এক মসিহার। ওয়াইয়াকি কি পারবে কালো মানুষদের মসিহা হয়ে উঠতে। নাকি ন্যয়মবুরার সঙ্গে সে পালিয়ে যাবে নাইরোবি শহরে?
Nilanjana Hazra | নীলাঞ্জন হাজরা
‘আর্সেনিক’ বাংলা উপন্যাসে এক আশ্চর্য সংযোজন। এই উপন্যাসের আবহ, এবং অদ্ভুত কিছু চরিত্র পাঠককে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখবে। প্রেম, ঘৃণা, প্রতারণা, প্রতিশোধ এই শব্দগুলোকে নতুনতম মাত্রায় পরীক্ষা করেছেন লেখক। এই গথিক উপন্যাস মহাকাব্যিক ব্যাপ্তির দিকে যেতে চেয়েছে। লালমাটি আর জঙ্গলে ঘেরা পরিবেশে এই উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং ক্লাসিক পর্যায়ের কাহিনি মানুষের মনের গোপনতম হিংসা আর অপ্রতিরোধ্য যৌনতা নিয়ে অবিরত খেলা করেছে। মানুষ কী চায়, সেই স্বীকারোক্তি সে যখন নিজের কাছে করে, তখন হয়তো একটা দুর্ঘটনা ঘটে, এবং আশপাশের মানুষদের সে তখন ধ্বংস করে দিতে পিছপা হয়। না। এই উপন্যাসের প্রতিটি পরতে এক অনির্ণেয় অলৌকিকতার দেখা পাবেন পাঠক। শেষ পৃষ্ঠায় পৌঁছে হয়তো মনে হবে জীবনের এক অনাস্বাদিতপূর্ব অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে তিনি গেলেন।
কাজল সেনের দুটি উপন্যাস ‘সহবাস’ ও ‘পরবাস’ একত্রে দু’মলাটে সংকলিত হয়ে প্রকাশিত হলো ‘সহবাস ও পরবাস’ শিরোনামে। বস্তুতপক্ষে এই দুটি শব্দের ভাবনার মধ্যে পরষ্পর বিরোধী অর্থভাবনা বা ধারণা থাকলেও, সূক্ষ্ম ও নিবিড় চেতনায় শব্দ দুটিকে পরষ্পরের পরিপূরক বলে মনে হয়। সৃষ্টির শুরু থেকে প্রাণের বিকাশ এবং প্রাণীদের বংশবিস্তার হয়ে আসছে সাধারণ অর্থে সহবাস বা নারী-পুরুষের যৌনমিলনের প্রক্রিয়ায় এবং বিশদ অর্থে সহবাস বা সমবেতভাবে বসবাস করার প্রয়োজনীয়তায়। অর্থাৎ সহবাস ভাবনাটা একইসঙ্গে শারীরিক এবং মানসিক। অন্যদিকে পরবাস ভাবনাটা পুরোপুরি মানসিক। এমনও বলা যেতে পারে, কোনো পুরুষ ও নারী একই ছাদের তলায় বসবাস করে সহবাস বা যৌনমিলন করলেও তারা মানসিক ভাবে হয়তো অনেক দূরে অবস্থান করে, অর্থাৎ তারা পরবাসী। আবার যৌনসম্পর্ক ব্যতিরেকেও কোনো পুরুষ ও নারী বহু যোজন দূরত্বে বসবাস করেও মানসিকভাবে একই বিন্দুতে অবস্থান করে, আর তাই তারা পরবাস নয়, বরং সহবাস করে। ‘সহবাস ও পরবাস’ উপন্যাস দুটিতে এই ভাবনারই প্রতিফলন ঘটেছে।
হঠাৎ এক অতিমারির দৌলতে আমরা ছিন্নভিন্ন। দিশেহারা। এই সংবাদ আমাদের প্রত্যেকেরই জানা। এই জানা জিনিসকে সাহিত্যের পটে নতুন মাত্রা দেওয়ার চেষ্টা হয়।
এক কথায় এই উপন্যাসে তিলোত্তমানগরের জলকাহিনি বিবৃত হয়েছে। বাড়িতে পুরসভার পানীয় জলের সংযোগ নিতে গিয়ে একের পর এক বিচিত্র অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয় বিপ্লবকে। প্রবল দ্বিমুখী বাধার জট আসে তার সামনে। মনে হয় সে যেন জলের এক জটিল আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। বাঁকা পথে শুধু টাকাই যেখানে যথেষ্ট, সোজা পথে থাকে একের পর এক শর্ত। সেইসব শর্তপালনেও তার জ্যাঠতুতো ভাইরা বাধার প্রাচীররূপে দেখা দেয়। পাশাপাশি তিলোত্তমানগর পুরসভার আচরণও তার হৃদয়হীন মনে হয়। সমস্ত বাধা টপকে বিপ্লব কি পারবে বাড়িতে জল আনতে? জলের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা কি জীবনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা নয়? শুধু কি জল নিয়েই এই কাহিনি? নাকি জলের আড়ালে রয়েছে সম্পত্তি নিয়ে এক চিরকালীন ভ্রাতৃবিরোধ ও ঈর্ষা? এই সব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা আছে এই উপন্যাসে।
বাজাও আমারে বাজাও ॥ চিন্ময় গুহ, রক্ত ও অগ্নিময় জিভ: মুখের ছবি ॥ অমিতাভ মৈত্র, জিম মরিসনদের কলকাতা ॥ সুপ্রিয় চৌধুরী, রুমির কবিতার গহন অরণ্যে ॥ নীলাঞ্জন হাজরা, ক্রিসমাস ইভের দার্জিলিং ॥ মঞ্জীরা সাহা
ছোটবেলা থেকে স্পর্শকাতর মন। মানুষের দুঃখ-কষ্টে বরাবরই পাশে থাকেন। বিলাসিতার মধ্যে শৈশব কাটলেও গরীব মানুষের দুঃখ-ব্যথা আর মেয়েদের প্রতি অন্যায়-অবিচার-লাঞ্ছনা ব্যথাতুর করে তোলে তাঁর মন। সেজন্যে তাদের কথাই ঘুরে ফিরে আসে মনে—মেয়েদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা! এর বিরুদ্ধে সোচ্চার লেখিকার প্রতিবাদ।
বাঙলা কথাসাহিত্যের সাম্প্রতিকতম ফর্ম ঝুরোগল্প। হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ‘ঝুরঝুর’ শব্দের মানে লিখেছেন, ‘চূর্ণ দ্রব্যের মৃদুধারায় পতনের ভাব। আগে কথাসাহিত্যের প্রধান যে আঙ্গিক ছিল তা হল অণুগল্প, ছোটোগল্প, উপন্যাস। গল্পের এতো রকমফেরে ঝুরোগল্পের প্রয়োজনীয়তা কোথায়? প্রথমে শব্দ সংখ্যা ৩০০ থাকলেও মাঝে তা বেড়ে ৬০০ হয়। এখন কাজল সেনের মতে, ঝুরোগঞ্জের শব্দ সংখ্যা সর্বাধিক ৪০০। অসম্পূর্ণতা ঝুরোগল্পের মূল বৈশিষ্ট্য। কোনও নিটোল গল্প এখানে থাকবে না। শুরু হবে আচমকা এবং শেষও হঠাৎ। গল্প যদি কোনও নির্দিষ্ট পরিণতিতে পৌঁছে যায়, তবে তা ঝুরোগঞ্জের বৈশিষ্ট্য থেকে বিচ্যুত হবে। ঝুরোগল্প হবে ওপেন এন্ডেড। পরিণতি অর্থাৎ শেষ। যার পরে আর কিছু থাকতে পারে না। ঘটনা, চরিত্র বা সময়ের শেষ। ঝুরোগল্প এই শেষ কথাটা কখনও বলে না। যা রূপরেখা ও অলঙ্করণ আরও প্রকট হয়I
Kajol Sen | কাজল সেন
সাহিত্যের পরিপুষ্টির ইতিহাস সবসময়ই নতুন ফর্ম আবিষ্কারের ইতিহাস। ঝুরোগল্প একবিংশ শতকের বিশ্বায়ন পরবর্তী গোলকায়িত পুঁজির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা এক ফ্র্যাগমেন্টেড ফর্ম যা আমাদের চারপাশে সময়-সমাজ-রাজনীতির ভাঙনকে এক ভঙ্গুর ন্যারেটিভ স্ট্রাকচারে ধরবার চেষ্টা করতে পারে। ঝুরোগল্প চিন্তাগদ্যের মুক্ত পরিসরে স্বতন্ত্র হয়ে উঠতে পারে যেখানে চিন্তা সবসময় কাহিনির আকার না নিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াবে। যা রূপরেখা ও অলঙ্করণে আরও প্রকট হয়েছে।
Sudhendu Chakraborty | শুদ্ধেন্দু চক্রবর্তী
এই গল্পগুলির কুশীলবরা কেউ কল্পনা প্রসূত নয়। তারা রক্তমাংসে জীবন্ত। কখনও তারা চলমান লোকাল ট্রেনে ভেন্ডার বগির আগের বগিতে মাইক আর কারা ওকে হাতে রাহুলদেব বর্মনের গান গেয়ে শোনায়। আবার কখনও বা শহরের ব্যস্ত ডাক্তারবাবুর চেম্বারে অপেক্ষমান হয়ে দূর থেকে শুনতে পায় শিশুর মাতৃ আর্তি। কোনও দমবন্ধ শীততাপ আইসিইউতে চলতে থাকে একস্ট্রা টাইম আর পেনাল্টি শ্যুটআউট। আবার কখনও প্রদ্যুম্ন আর অনয়া একই দেহে পাড়ি দেয় মহাকাশে। এখানে সন্ধান মিলবে চিলেকোঠার দিন-ই-ইলাহির। কখনও মধুযাপন হয়ে উঠবে শহরের পাথরবিদ্ধ পথে এক রূপকথার টানা রিক্সা সফর। এটি কোনও গল্পগ্রন্থ নয়। এটি পড়ন্ত সভ্যতার অলিগলি দিয়ে চলতে থাকা একটি বিচিত্র মনস্তাত্ত্বিক সফর। সেখানে সহযাত্রী শুধুই নিঃসঙ্গতা আর একচিলতে আশার আলো…
Goutam Dey | গৌতম দে
পাঠকদের শুধু গল্প বলা নয়, আখ্যান নিয়ে নিরন্তর গবেষণা, গল্পের চেহারায় আমূল ভাঙচুর ঘটিয়ে স্বাদু গদ্য পরিবেশন করাকেই বরাবর প্রাধান্য দিয়ে এসেছেন গৌতম দে। তাঁর ‘সেভাবে রক্তপাত হয়নি’ ছোট গল্প সংকলনের দু মলাটে বন্দি হয়েছে ১৯টি বিস্ফোরক গল্প। ফর্ম নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পাশাপাশি গল্পের বিষয়বস্তুর অভিনবত্বের কথা মাথায় রেখেছেন লেখক। পাঠক এই সংকলন পড়তে পড়তে চিনে নিতে পারবেন তাদের আশপাশে ঘটে চলা প্রতিদিনের রঙিন গল্পগুলিকে।
Sanjib Niyogi | সঞ্জীব নিয়োগী
“খাঁচা বিষয়ক অন্যান্য গল্প” বাংলা ছোট গন্ধের জগতে একেবারেই ভিন্নতর এক সংযোজন। প্রচলিত কখন-ভাঙ্গিমার থেকে বহু যোজন দূরে এই লেখকের অবস্থান, পটভূমি আর বিষয়কে যেরকম বিরল এক বিন্দু থেকে দেখা হয় গরগুলিতে, তাতে বারবার অভিনব কোনও পৃথিবীর জানালা খুলে যায়। উঁচু স্বরে কোনও নীতি, আদর্শ বা ঔচিত্যবোধের দায় বহন করেন না। লেখক। জীবনের স্বাস্থ্য তাঁর কলমে প্রাধান্য পায়, যা পু পুঁথি-পড়া বিদ্যার সাথে বা গতানুগতিক ন্যায় নীতির সাথে অনেকাংশেই খাপ খায় না। যেকারণে পাঠক আরও বিপণ্ন বোধ করেন। বলার একেবারেই নিজস্ব এক ধরণ গড়ে তুলেছেন লেখক, আপাত নিরীহ অবলম্বনকে কেন্দ্র করে ও সাধারণভাবে শুরু হয়ে গল্পগুলো আশ্চর্য এক গ্রহন রহস্য ও অভিযাত নির্মাণ করে। মানুষের মুখের স্বাভাবিক ভাষা আর বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলের ডায়ালেক্ট নিপুণ দক্ষতায় প্রয়োগ করেন লেখক। লেখক নিজের শুচিবায়ু দিয়ে কখনও তাঁর সৃষ্ট চরিত্রের মনের ভাবনা বা মুখের ভাষা প্রভাবিত করেন না। বিচিত্র জীবনের অকৃত্রিম ছবি ফুটে ওঠে এই বইয়ের গল্প গুলিতে। আর সেইসব বর্ণনা বাংলা গাঙ্কের জগতে অনাস্বাদিতপূর্ণ মাত্রা নিয়ে হাজিত হয়। এই দেখা ও বলার ধরণ অননুকরণীয়।
Hindol Bhattacharya | হিন্দোল ভট্টাচার্য
প্রচলিত গল্পকারদের চেয়ে ভিন্নধারার গল্প লেখেন এই লেখক। এর আগে লেখকের গল্প-সংকলন ‘সব গল্প কাল্পনিক’ প্রকাশিত হয়েছিল, যা ছিল বারোটি গল্পের সংকলন।
Anindya Sundar Pal | অনিন্দ্য সুন্দর পাল
সাহিত্য এবং ইতিহাস বিষয়টি পারস্পরিক। সেখানে স্মৃতির নির্মাণ-বিনির্মাণ, সভ্যতার অস্তিত্ব, ক্রমবিবর্তনের প্রতিষ্ঠা এই নিয়ে গড়ে ওঠে চর্চার আগ্রহ। যা একই সুতোয় বাঁধা পড়তে পড়তে পরিণত হয় এক ঘটনামূলক প্রবণতায়। আর এই প্রবণতা ধরেই উঠে আসে আদিম পরম্পরা, সংস্কার রক্ষার তাগিদ, অন্তর্নিহিত শৈল্প-নৈপুণ্যতার প্রতিফলন। যার প্রকাশ ঘটে ভাষায়, প্রকরণে, রুচিতে, চিন্তা এবং চেতনায়। আবার এই চিন্তা চেতনা বিকাশ— সমস্ত কিছুর হাত ধরে মুষ্টিবদ্ধ হয় সাহিত্যের রেখাপাত। এবং এই রেখাপাতের প্রাসঙ্গিকতাই লুকিয়ে থাকে আদিম ভাষা সাহিত্যের প্রবর্তনে। শুধু শব্দে বাক্যে নয় চিত্র ও অলংকরণেও প্রতিষ্ঠিত হয় ধারাবাহিক ধারণার , তাইই আদি কাল থেকে রেখায় রেখায় মূর্ত হয়ে আসছে প্রাচীন ভারত ও ইতিহাসের ধ্যান ও ধারণার সামগ্রিক প্রকটতার সাক্ষী হিসাবে ম্যুরাল পেন্ট ও কারুকার্যময় নিদর্শনের মতো বহু জিনিস, যা ইতিহাস ও সাহিত্যের অন্যতম অলিন্দ-নিলয় বলা যেতে পারে।‘প্রাচীন ভারতের সংক্ষিপ্ত রূপরেখা ও সাহিত্য’ এই লেখ্যধারা এবং রেখাপাতের একটি সম্পূর্ণ ও সংক্ষিপ্ত অধ্যায়।
Debasish Saha | দেবাশিস সাহা
১৯৪৭ সাল, ১৪ আগষ্ট। মধ্যরাত। ভারতবর্ষ দুটুকরো হল। জন্মলাভ করল ভারত ও পাকিস্তান নামে দু’টি স্বাধীন রাষ্ট্র। পাকিস্তানের আবার দু’টি ডানা- পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তান। রাজনৈতিক স্বাধীনতা এল বটে, কিন্তু কোটি কোটি মানুষের ভাগ্যাকাশের তারা গেল মেঘে ঢেকে। উধাও হল বুকের নিভৃতে লালিত নীলকন্ঠ পাখি।
এই গ্রন্থের প্রারম্ভেই লেখক উল্লেখ করছেন, “ইতিহাস আদতে সময়ের শৃঙ্খলা ও ছন্দের কারুকার্যময় অসামান্য এক চিত্রকলা।”
Hindol Bhattacharya | হিন্দোল ভট্টাচার্য
বিগত কুড়ি বছরে কবি হিন্দোল ভট্টাচার্য নানা বিষয়ে গদ্যও লিখেছেন। সেই সব গদ্যগুলি থেকে শুধু সাহিত্য ও কবিতা সংক্রান্ত কিছু গদ্য নিয়ে এই সংকলন। সেগুলির মধ্যে যেমন রয়েছেন রামপ্রসাদ সেন, তেমনই শঙ্খ ঘোষ, অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত, জয় গোস্বামী থেকে কবিতা সম্পর্কে কবির নিজস্ব ভাবনা। বলা যেতে পারে, এই গদ্যগ্রন্থ কবির নিজস্ব কাব্যচিন্তার এক ফসল। হয়তো আগামী দিনে এই সব চিন্তাও বদলে যেতে পারে। কিন্তু ‘৯৮ থেকে ২০২১ পর্যন্ত গদ্যগুলির একটি অংশ এই গ্রন্থে ধরা রইল। গদ্যসংকলন নয়, বরং বলা ভাল, এই গ্রন্থটি কবির বিশেষ বিশেষ ভাবনার সংকলন।
Sudip Das | সুদীপ দাস
চেয়ে থাকতে থাকতে চোখের জল শুকিয়ে আসলেও চোখ বন্ধ করা যাবে না। চোখেই বাস করে জিজ্ঞাসা, আর দৃশ্যের ভিতরেই থাকে সাংকেতিক উত্তর। জীবনের অন্তঃস্থল অবধি দেখতে চাওয়ার জন্যই তো একটা নির্জন ঘরে কম্পিউটারের সাদা স্ক্রিনের সামনে বসা আর কীবোর্ডে কয়েকটা আঙুল ছুঁইয়ে রাখা। তারপর অনন্ত প্রতীক্ষা। আগে এই প্রতীক্ষা ছিল ক্লান্তিকর। এখন এই প্রতীক্ষাই আনন্দ। বসে থাকতে থাকতে, তাকিয়ে থাকতে থাকতে একসময় জমে থাকা অনুভূতি মাথা উপচে, শরীর উপচে, হাত উপচে গড়িয়ে নেমে যায় স্ক্রিনে। এভাবেই অগাধ জলে ভেসে থাকে খড়কুটো।
Prasenjit Dutta | প্রসেনজিৎ দত্ত
প্রসেনজিৎ শব্দ দিয়ে ছবি আঁকেন। সেই সব ছবিতে জ্যান্ত হয়ে ওঠে আপাদ মাথা ভুবনডাঙা। কখনও সে বিমূর্ত, কখনও বা সনাতনী। কখনও বুদ্ধিদীপ্ত মাপা ভাবের কারবারি, কখনও বাউল। এভাবেই অনির্দিষ্ট অসংযত আচার আলেখ্য থেকেই বিয়াসের জন্ম।
Anupam Mukhopadhyay | অনুপম মুখোপাধ্যায়
একই নদীতে দুবার স্নান করা যায় না। অনুপম মুখোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে এ কথা আশ্চর্যভাবে সত্যি। তাঁর একই কবিতা একের পর এক পাঠে একেকভাবে বদলে যায়। এই কবির প্রতিটি কাব্যগ্রন্থ তাঁর আগের বইটিকে অতিক্রম করে। কখনও তা পাঠকের কাছে আসে, কখনও পাঠককে দূর থেকে হাতছানি দেয়। প্রতিটি কবিতার মধ্যে থাকে অজস্র কবিতার আর অগাধ জীবনের হাতছানি। ১ হাজার আয়নার আগুন’ এই সময়ের এক অনিবার্য কাব্যগ্রন্থ। আমরা নিশ্চিত, এই বইটি বাংলা কবিতার ইতিহাসে স্থান পাবে এবং নিজের জায়গা করে নেবে মরমী পাঠকের হৃদয়ে, রসিকজনের দরবারে।
Rupayan Ghosh | রূপায়ণ ঘোষ
মনে হয় একজন কবিকে আত্মজৈবনিক নির্জনতার ক্লান্তি অতিক্রম করে সময়ের বহুমাত্রিক নীরব অথবা সরব আওয়াজটিকে ধারণ করতে হয়, সেক্ষেত্রে তাঁর মধ্যে বিশ্বব্যাপী বহুরৈখিক চলমানতা অত্যন্ত আবশ্যক হয়ে পড়ে।’—বইটির মুখবন্ধে কবির এই ঘোষণা আদতে ভারতীয় উপনিষদের সেই মহাকাব্যিক তত্ত্বকে সামনে নিয়ে আসে যা চিরন্তন আত্মশক্তির কথা উচ্চারণ করেছে। আত্মন বা নিজস্ব অস্তিত্বকে সর্বপ্রকারে জেনে উঠতে সক্ষম হলেই যাবতীয় মোহের বেড়াজাল ভেঙে ফেলা সম্ভব হয়। মানব চৈতন্য হয়ে ওঠে সর্বকালের, সর্বপ্রেক্ষিতের। আর সেখানেই যখন কাব্যগ্রন্থের পরতে পরতে উচ্চারিত হয় মানবীয় চেতনার খোঁজ- যা অদৃশ্য অথচ দৃশ্যমান, নীরব অথচ সরব, তখনই কবিতার যাত্রাপথে রচিত হয় কবি ও পাঠকের নিরবয়ব স্তোত্রগান— যা অসীম, যা অতলান্ত।
Goutam Guha Roy | গৌতম গুহ রায়
সমকালের ভারতীয় চিত্রকলার প্রথম সারির শিল্পী, প্রান্তিক জীবন যুদ্ধে প্রতিকূলতাকে জয় করে শিল্পী হয়ে ওঠার এক প্রতীক চরিত্র। ক্যালকাটা পেইন্টাস তৈরি করা থেকে ‘চারুকলা মেলা’র আয়োজক, প্রধান সংগঠক রবীন মণ্ডল। ১৯৩২ এ হাওড়ায় জন্ম, ১৯৪১’এ অসুস্থতার জন্য লেখাপড়ায় ক্ষণিক ছেদ, আবার শুরু করে ১৯৪৫’এ বাণিজ্যে স্নাতক। ১৯৫৬-৫৮, ইন্ডিয়ান কলেজ অব আর্টসের সান্ধ্য বিভাগে ভর্তি হয়ে চিত্রশিক্ষার তালিম নেন। ১৯৬১তে প্রথম একক প্রদর্শনী। আঙ্গিক আর ক্রিয়াকৌশল, দৃষ্টিভঙ্গি আর অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে তাঁর চিত্রের দৃপ্ত যাত্রায় তৈরি হয় তাঁর স্বতন্ত্র পরিচিতি।